"আবেশে মুখ রেখে পিয়াল ডালে
ওই সাতরঙা পাখি বলে মনের কথা,
ওই সাতরঙা পাখি বলে মনের কথা,
গরবী মানিনী তার সাথী রে,
বলে নীড় সাজানোর কতো কথা
ও কাঠঠোকরা বউ মান কোরো না,
বলে নীড় সাজানোর কতো কথা
ও কাঠঠোকরা বউ মান কোরো না,
শোনো কথা...."
Black rumped golden flame-back 'Woodpecker' (Scientific Name: Dinopium Bengalensi) |
আমার ছোটবেলায় শোনা, নির্মলা মিশ্রের গাওয়া একটা খুব মিষ্টি আর মজার গান - দিদিদের মুখে যে কতোবার শুনেছি, তার ঠিক নেই। প্রায় পঁয়তাল্লিশ বছর আগে, ১৯৬৯ সালে পুজার গান হিসাবে HMV থেকে প্রকাশিত হয়েছিলো এই গানের রেকর্ডটি। গানটির গীতিকার ছিলেন শ্রদ্ধেয় পুলক বন্দোপাধ্যায়, আর এতে সুর দিয়েছিলেন সে'সময়কার প্রখ্যাত সুরকার, রতু মুখোপাধ্যায়। বাংলা গানের জগতে পাখিদেরকে নিয়ে গান খুব একটা শোনা যায় না, তার উপরে কাঠঠোকরার মতো সাধারণ পাখিকে নিয়ে গান তো নয়ই।
আমার বাড়ি থেকে অফিসের দূরত্ব মোটামুটি সাড়ে নয় মাইলের মতো। রাস্তায় খুব একটা ভীড় না থাকলে মোটামুটি মিনিট কুড়ি থেকে পঁচিশের মতো লাগে আমার অফিসে যেতে, বা অফিস থেকে ফিরতে। যাবার সময় আমি সাধারনত গাড়ির রেডিওর FM ট্র্যাফিক চ্যানেলটা (KCBS FM106.9) চালিয়ে দিই, যাতে প্রতিদিন কোথায় কি অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে,বা কোন রাস্তায় কিরকম জ্যাম হয়ে চলেছে, সেসব তথ্য জানতে পারি। বে-এরিয়ার এই লোকাল চ্যানেলে সকালের দিকে প্রতি দশ মিনিট অন্তর করে করে ট্র্যাফিক আপডেট দিয়ে চলে, আর তার ফাঁকে ফাঁকে নানান ধরনের ছোট ছোট খবর এবং বিজ্ঞাপন শোনায়। তবে সেগুলো আমাদের দেশের মতো তিতি-বিরক্তিকর, গান-ওয়ালা, আলতু-ফালতু নাটকীয় বিজ্ঞাপন নয় - বেশিরভাগই ট্যেকনোলজি ওরিয়েন্টেড, আর যথেষ্ঠ শিক্ষণীয়। এই যেমন গতকাল সকালে Woodpecker, অর্থাৎ "কাঠ-ঠোকরা" পাখিকে নিয়ে দু'মিনিটের, ছোট্ট একটি বিজ্ঞাপন-কাম-প্রতিবেদন হলো, যেটা শুনে আমি এতো অবাক হয়ে গেলাম যে ঠিক করলাম বাড়ি ফিরেই সেটা নিয়ে একটা কিছু লিখবো !!
আমার বাড়ি থেকে অফিসের দূরত্ব মোটামুটি সাড়ে নয় মাইলের মতো। রাস্তায় খুব একটা ভীড় না থাকলে মোটামুটি মিনিট কুড়ি থেকে পঁচিশের মতো লাগে আমার অফিসে যেতে, বা অফিস থেকে ফিরতে। যাবার সময় আমি সাধারনত গাড়ির রেডিওর FM ট্র্যাফিক চ্যানেলটা (KCBS FM106.9) চালিয়ে দিই, যাতে প্রতিদিন কোথায় কি অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে,বা কোন রাস্তায় কিরকম জ্যাম হয়ে চলেছে, সেসব তথ্য জানতে পারি। বে-এরিয়ার এই লোকাল চ্যানেলে সকালের দিকে প্রতি দশ মিনিট অন্তর করে করে ট্র্যাফিক আপডেট দিয়ে চলে, আর তার ফাঁকে ফাঁকে নানান ধরনের ছোট ছোট খবর এবং বিজ্ঞাপন শোনায়। তবে সেগুলো আমাদের দেশের মতো তিতি-বিরক্তিকর, গান-ওয়ালা, আলতু-ফালতু নাটকীয় বিজ্ঞাপন নয় - বেশিরভাগই ট্যেকনোলজি ওরিয়েন্টেড, আর যথেষ্ঠ শিক্ষণীয়। এই যেমন গতকাল সকালে Woodpecker, অর্থাৎ "কাঠ-ঠোকরা" পাখিকে নিয়ে দু'মিনিটের, ছোট্ট একটি বিজ্ঞাপন-কাম-প্রতিবেদন হলো, যেটা শুনে আমি এতো অবাক হয়ে গেলাম যে ঠিক করলাম বাড়ি ফিরেই সেটা নিয়ে একটা কিছু লিখবো !!
~ ~ ~ ~ ~
সম্প্রতি চাইনিজ সায়েন্টিস্টরা কাঠঠোকরা-র একটা 3D কম্প্যুটার মডেল তৈরী করেছে, যাতে বোঝা যায় যে কি করে কাঠঠোকরা পাখিরা খাবার খোঁজার সময়ে কাঠের উপরে তাদের ছোট্ট ঠোঁট দিয়ে করে চলা অবিশ্রান্ত ঠোকরানোর ধাক্কার ধকল সামলে নেয়। গবেষণায় জানা গেছে যে তারা খুব কম করে হলেও, ১৬ মাইল স্পীডে কাঠের উপরে ঠুকরিয়ে চলে - ওই একই স্পীডে আমরা যদি কোনো শক্ত গাছে আমাদের মাথা ঠোকরাই তো কয়েকবার ঠোকরানোর পরেই আমাদের মাথাটা ভেঙ্গে চৌচির হয়ে যাবে!! Obviously এই সব গবেষণার মূল উদেশ্য হলো, কি করে আমরা মোটরগাড়ির shock absorber-কে আরও ইমপ্রুভড করতে পারি, যাতে চলন্ত দুটো গাড়ির মধ্যে মুখোমুখি, ভয়ানক collision হলেও, মৃত্যুর হাত থেকে গাড়ির ড্রাইভাররা অন্তত: প্রানে বেঁচে যায়, এবং গাড়িরও কম physical ড্যামেজ হয়।
তো, দেখা গেছে কাঠঠোকরার ছোট্ট মাথাটা হলো এক ধরনের অত্যাধুনিক "শক অ্যাবজর্ভার" - যেটা কিনা প্রতিটি ধাক্কায় উৎপাদিত এনার্জির 99%-এরও বেশি শুষে, বা অ্যাবজর্ভ করে নেয় !! আর তারপর সেই এনার্জিকে "Strain Energy"-তে রুপান্তরিত করে, নিজেদের দেহের মধ্যেই চালান করে দেয় !! যার ফলে কাঠঠোকরার ব্রেনে সেই এনার্জির প্রভাব খুব সামান্যই এসে পৌঁছায় - in fact এক পার্সেন্টের এক-তৃতীয়াংশেরও কম এনার্জি তাদের ব্রেনে গিয়ে পৌঁছায়। আর সেই এনার্জি তাদের ব্রেন থেকে ধীরে ধীরে নিজেদের দেহের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে দেহের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয়। যে জন্যে তারা ঠোকরানোর সময়ে কিছুক্ষণ অন্তর অন্তর ছোট্ট করে একটা break নিয়ে নেয়।
শুধু এইই নয়, আরো জানা গেছে যে কাঠঠোকরার মাথার খুলি, আর ঠোঁঠের structure, সময়ের সাথে সাথে ক্রমাগতই evolved হয়ে চলেছে, যাতে আরো, আরও কম ধাক্কার ধকল তাদের শরীরকে সইতে হয়। আমরা (মানুষেরা) তাদের এই উন্নত পদ্ধতিকে ফলো করে আরো better অ্যান্টি-শক যন্ত্র (anti-shock devices) বানাতে পারি - যেগুলো আমাদের মোটরগাড়িদের মুখোমুখি, ভয়ানক ধাক্কা এড়াতে, কিম্বা আরও নির্ভরযোগ্য স্পেস ক্র্যাফট তৈরিতে অনেক কাজে আসবে।
এই ছোট্ট পাখির দেহে যতো কলাকৌশল আছে, মানুষ তা এতোদিনেও নিজেদের জগতে আয়ত্ত করতে পারেনি !! ভাবলেই ভীষণ অবাক হয়ে যেতে হয় !! ঈশ্বর কি তাহলে সত্যিই কোথাও আছেন ?
তো, দেখা গেছে কাঠঠোকরার ছোট্ট মাথাটা হলো এক ধরনের অত্যাধুনিক "শক অ্যাবজর্ভার" - যেটা কিনা প্রতিটি ধাক্কায় উৎপাদিত এনার্জির 99%-এরও বেশি শুষে, বা অ্যাবজর্ভ করে নেয় !! আর তারপর সেই এনার্জিকে "Strain Energy"-তে রুপান্তরিত করে, নিজেদের দেহের মধ্যেই চালান করে দেয় !! যার ফলে কাঠঠোকরার ব্রেনে সেই এনার্জির প্রভাব খুব সামান্যই এসে পৌঁছায় - in fact এক পার্সেন্টের এক-তৃতীয়াংশেরও কম এনার্জি তাদের ব্রেনে গিয়ে পৌঁছায়। আর সেই এনার্জি তাদের ব্রেন থেকে ধীরে ধীরে নিজেদের দেহের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে দেহের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয়। যে জন্যে তারা ঠোকরানোর সময়ে কিছুক্ষণ অন্তর অন্তর ছোট্ট করে একটা break নিয়ে নেয়।
শুধু এইই নয়, আরো জানা গেছে যে কাঠঠোকরার মাথার খুলি, আর ঠোঁঠের structure, সময়ের সাথে সাথে ক্রমাগতই evolved হয়ে চলেছে, যাতে আরো, আরও কম ধাক্কার ধকল তাদের শরীরকে সইতে হয়। আমরা (মানুষেরা) তাদের এই উন্নত পদ্ধতিকে ফলো করে আরো better অ্যান্টি-শক যন্ত্র (anti-shock devices) বানাতে পারি - যেগুলো আমাদের মোটরগাড়িদের মুখোমুখি, ভয়ানক ধাক্কা এড়াতে, কিম্বা আরও নির্ভরযোগ্য স্পেস ক্র্যাফট তৈরিতে অনেক কাজে আসবে।
এই ছোট্ট পাখির দেহে যতো কলাকৌশল আছে, মানুষ তা এতোদিনেও নিজেদের জগতে আয়ত্ত করতে পারেনি !! ভাবলেই ভীষণ অবাক হয়ে যেতে হয় !! ঈশ্বর কি তাহলে সত্যিই কোথাও আছেন ?
কুন্তল লেখাটি বড় ভাল লাগল। ভাল থাকবেন।আমার শুভেচ্ছা রইল।
ReplyDelete