ঈশ্বর আছেন কি না তা সত্যিই এক বড় রহস্যময় প্রশ্ন। জীবনে বহুবার এমন কিছু অসহায় পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছি যে মনে হয়েছে যে ঈশ্বরের সরাসরি হস্তক্ষেপ ছাড়া সেখান থেকে পরিত্রাণ পাওয়া আমার পক্ষে সম্ভবপর ছিলো না। আবার অন্যদিকে বহু জটিল পরিস্থিতিতে ঈশ্বরকে একমনে ডেকেও কোনো লাভ হয়নি। হয়তো বা আমার সেই ডাকের মধ্যে তেমন আকুলতা ছিলোনা, বা নিষ্ঠার অভাব ঘটেছিলো।
ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি আমাদের বাড়িতে নিয়ম করেই দু'বেলা পূজা-আর্চা হতো। নিম্ন-মধ্যবিত্তের সংসারে পুজারী ব্রাহ্মণ ডেকে, মন্ত্র-উচ্চারণ সহ পুজা করার সামর্থ্য আমাদের ছিলো না। অগত্যা ফুল-দূর্বা-ভোগ সহযোগে, কাঁসর-শঙ্খধ্বনি ও ঠাকুর প্রনামের মধ্যে দিয়ে, অনাড়ম্বর ভাবেই মূলত: আমাদের বাড়ির পুজাগুলি সম্পন্ন হতো। সেই কারণেই কি না জানিনা, ছোটবেলায় তেমন কোনো বড়োসড় দুর্ঘটনা, বা অমঙ্গলের কালো ছায়া আমাদের পরিবারে দেখা দেয়নি। মা-পিসিমা বহুবারই বাড়ির ছাদের ঠাকুরঘরে 'অন্য কোনো এক কিছুর' উপস্থিতি লক্ষ্য করেছিলেন। আমার কপালে তেমন কিছু দেখার সৌভাগ্য না-ঘটলেও গভীর রাতে নূপুরের মিষ্টি-ধ্বনি সহযোগে অদ্ভুত সুন্দর, অপার্থিব কোনো এক কিছুর সুঘ্রাণ বহুবারই আমি ঘুমের মধ্যে উপলব্ধি করেছিলাম।
জীবনের মাঝপথে এসে বুঝেছি ঈশ্বরের অস্ত্বিত্ব যুক্তি দিয়ে বোঝা সম্ভব নয় - এটা এক শুধুই অনুভুতি মাত্র। যার মধ্যে ধর্ম নেই, মন্ত্র নেই, বাহ্যিক আড়ম্বর নেই - আছে শুধু ঐ অনুভুতি। জাগতিক বাস্তব সমস্ত কিছুর বাইরে, অন্য কোনো এক কিছুর অস্তিত্ব। পোশাক, চামড়ার রং, উঁচু জাত-এর গাম্ভীর্য্য থেকে শুরু করে আমরা অনেক কিছু পরে আছি - আস্তরণের পর আস্তরণ দিয়ে আমরা ঢেকে আছি। এক এক রকমের অহংকারের পলেস্তরা ধীরে ধীরে আমাদের মধ্যে থাকা আসল 'আমি'কেই গ্রাস করে ফেলেছে। সেই আস্তরণ, অহংবোধ থেকে মুক্ত না-হতে পারলে এ জীবনে ঈশ্বরের দর্শন সম্ভবপর নয়।
Yes.. Complete self surrender.
ReplyDeleteশরণাগত
ReplyDelete