Ancient Giant Sequoia Trees - Nature's ever-growing wonders... |
...
.....
অতি ধীর কচ্ছপের গতিতে চলতে চলতে আমরা শেষমেষ সিকোয়া ন্যশনাল পার্কের ঢোকার মুখের কাছাকাছি চলে আসলাম। সামনে গাড়িদের বিশাল লম্বা লাইন। লং উইকেন্ড বলে যেন সারা ক্যালিফোর্নিয়ার লোকজন এখানে চলে এসেছে - আধ মাইল স্পিডে গাড়ি এগুচ্ছে। মাথার উপরে ঝকঝকে, ঘন নীল আকাশ - দেখেই মনে হয় ফটোশপড - নাহলে এতো নীল হয় কি করে? আমাদের পাশে পাশেই চলেছে হালকা জঙ্গুলে জায়গা। আমাদের ঠিক সামনের একটা কনভার্টিবলে এক ভদ্রলোক ও তাঁর স্ত্রী (সম্ভবত:) খুব করুণ মুখ করে বসে আছেন। গাড়ির নেমপ্লেটে লেখা: 'KANCHWA' - দেখেই আমার 'কানচা রে কানচা রে, প্যার মেরা সাচ্চা, রুক যা না-যা দিল তোড়কে...' বলে গান গাওয়ার বেজায় ইচ্ছা হতে লাগলো। একটু পরে সামনের সেই দুঃখী মানুষদ্বয় বিরক্ত হয়ে গাড়ির ছাদটা লাগিয়ে দিলো! অবশেষে গেটের কাছে এসে আমরা পার্কে ঢোকার টিকিট কিনে নিলাম। এক্কেবারে দুর্গম জায়গা - কোনো মোবাইল নেটওয়ার্ক নেই, খাবার দোকানপত্র কিচ্ছু নেই, গার্বেজ-বিন প্রায় চোখেই পড়ে না - কিন্তু পার্কিং লট আর স্যানিটারী টয়লেট ঠিক বানিয়ে রেখেছে। রেস্টরুমখানা আবার কাঠের লগের সুদৃশ্য বাড়ির মতো দেখতে। ভুলে করে আমি আবার সেটার খান কয়েক ছবি তুলে নিলাম!! যাই হোক এবার সিকোয়া ন্যশনাল পার্কের মধ্যে দিয়ে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হলো আমাদের - ধীরে সুস্থে ঘন জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে পাড়ি জমালাম। ধীরে সুস্থে কথাটা অবশ্যি ঠিক নয় - বেশ আঁকাবাঁকা পাহাড়ী পথ - জিকজ্যাক মোচড় - 90 ডিগ্রী নয়, একেবারে 180 ডিগ্রীর মোচড়। এক মোচড় দিয়ে গাড়ি সোজা করতে না করতেই আরেকটা এসে হাজির হয়। রাস্তার পাশে রেলিং-ফেলিং বলে কিছু নেই। মাঝে মাঝেই পাশে খাড়া খাদ - সেইখানে আবার এক্সট্রা খাতির হিসেবে বিশাল থামের মতো ইয়া লম্বা লম্বা সিকোয়া গাছ। এর মধ্যে আরেক জ্বালা হলো, উপরে উঠছি বলে কান বন্ধ হয়ে শ্রবণশক্তি লোপ পেতে চলেছে। রাস্তার আশে পাশে 60 ডিগ্রীতে খাড়া খাড়া পর্বতের ঢাল উঠে গেছে। সেই ঢালগুলোতে আবার 30 ডিগ্রী কোণে অগুন্তি সিকোয়া আর পাইন গাছ। পথের মাঝে মাঝে এক একটা পর্বত সামনা-সামনি অ্যাতো কাছে চলে আসছে যে বুক ধ্বক করে ওঠে।
.....
অতি ধীর কচ্ছপের গতিতে চলতে চলতে আমরা শেষমেষ সিকোয়া ন্যশনাল পার্কের ঢোকার মুখের কাছাকাছি চলে আসলাম। সামনে গাড়িদের বিশাল লম্বা লাইন। লং উইকেন্ড বলে যেন সারা ক্যালিফোর্নিয়ার লোকজন এখানে চলে এসেছে - আধ মাইল স্পিডে গাড়ি এগুচ্ছে। মাথার উপরে ঝকঝকে, ঘন নীল আকাশ - দেখেই মনে হয় ফটোশপড - নাহলে এতো নীল হয় কি করে? আমাদের পাশে পাশেই চলেছে হালকা জঙ্গুলে জায়গা। আমাদের ঠিক সামনের একটা কনভার্টিবলে এক ভদ্রলোক ও তাঁর স্ত্রী (সম্ভবত:) খুব করুণ মুখ করে বসে আছেন। গাড়ির নেমপ্লেটে লেখা: 'KANCHWA' - দেখেই আমার 'কানচা রে কানচা রে, প্যার মেরা সাচ্চা, রুক যা না-যা দিল তোড়কে...' বলে গান গাওয়ার বেজায় ইচ্ছা হতে লাগলো। একটু পরে সামনের সেই দুঃখী মানুষদ্বয় বিরক্ত হয়ে গাড়ির ছাদটা লাগিয়ে দিলো! অবশেষে গেটের কাছে এসে আমরা পার্কে ঢোকার টিকিট কিনে নিলাম। এক্কেবারে দুর্গম জায়গা - কোনো মোবাইল নেটওয়ার্ক নেই, খাবার দোকানপত্র কিচ্ছু নেই, গার্বেজ-বিন প্রায় চোখেই পড়ে না - কিন্তু পার্কিং লট আর স্যানিটারী টয়লেট ঠিক বানিয়ে রেখেছে। রেস্টরুমখানা আবার কাঠের লগের সুদৃশ্য বাড়ির মতো দেখতে। ভুলে করে আমি আবার সেটার খান কয়েক ছবি তুলে নিলাম!! যাই হোক এবার সিকোয়া ন্যশনাল পার্কের মধ্যে দিয়ে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হলো আমাদের - ধীরে সুস্থে ঘন জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে পাড়ি জমালাম। ধীরে সুস্থে কথাটা অবশ্যি ঠিক নয় - বেশ আঁকাবাঁকা পাহাড়ী পথ - জিকজ্যাক মোচড় - 90 ডিগ্রী নয়, একেবারে 180 ডিগ্রীর মোচড়। এক মোচড় দিয়ে গাড়ি সোজা করতে না করতেই আরেকটা এসে হাজির হয়। রাস্তার পাশে রেলিং-ফেলিং বলে কিছু নেই। মাঝে মাঝেই পাশে খাড়া খাদ - সেইখানে আবার এক্সট্রা খাতির হিসেবে বিশাল থামের মতো ইয়া লম্বা লম্বা সিকোয়া গাছ। এর মধ্যে আরেক জ্বালা হলো, উপরে উঠছি বলে কান বন্ধ হয়ে শ্রবণশক্তি লোপ পেতে চলেছে। রাস্তার আশে পাশে 60 ডিগ্রীতে খাড়া খাড়া পর্বতের ঢাল উঠে গেছে। সেই ঢালগুলোতে আবার 30 ডিগ্রী কোণে অগুন্তি সিকোয়া আর পাইন গাছ। পথের মাঝে মাঝে এক একটা পর্বত সামনা-সামনি অ্যাতো কাছে চলে আসছে যে বুক ধ্বক করে ওঠে।
থাকি একটা মেগা-সিটিতে - অর্ধেক জীবন কাটিয়ে দিয়েছি উঁচু উঁচু বিল্ডিং আর মনুমেন্ট দেখে। কলকাতায় সাউথ সিটির পঁয়ত্রিশতলা বিল্ডিং-এর টংয়ে উঠেছি। শিকাগোর সীয়ার্স টাওয়ারে চড়েছি - টরন্টোর সিএন টাওয়ারেও ওঠা হয়েছে। কিন্তু এরকম বিশাল কিছু আমি বাস্তবে কেন, স্বপ্নেতেও কখনো দেখিনি। দৈর্ঘ্যে, প্রস্থে, উচ্চতা, গভীরতায়, অপ্রতিসমতায়, কোনভাবেই কোন কিছুর সাথেই আমি এই গাছগুলোর তুলনা করতে পারছিলাম না। এরা অ্যাতোটাই উঁচু, আর বিশাল যে সরাসরি উপরের দিকে না তাকালে আকাশ আর দেখা যায় না। চিন্তার অতীত কোন প্রাচীনকালে এই দৈত্য-সমাকৃতি গাছেদের সৃষ্টি হয়েছিলো - আরও অনিদির্ষ্ট কাল থাকার প্রতিজ্ঞা নিয়ে এরা দাঁড়িয়ে আছেই তো আছে। দেখলেই কেমন জানি নিজেকে খুব ক্ষুদ্র, তুচ্ছ, আর নশ্বর বলে মনে হয়। ছোটবেলায় গাছের মাথায় বাড়ি বানিয়ে থাকার খুব শখ হতো - আমাদের বাগানের বড়ো আমগাছটায় উঠে, তার দুই বিশাল কান্ডের জয়েন্টে গ্যাট্টুস হয়ে বসে থাকতাম। কিন্তু আজ এই সব বিশাল বিশাল গাছ দেখে হঠাৎ করে মন বলে উঠলো, 'বাপধন, সে শখের দরকার তোর আর নেই...'