Thursday, December 26, 2013

San Diego Tour - Xmas, December 2013



We're going where the sun shines brightly
We're going where the sea is blue
We've seen it in the movies
Now let's see if it's true...
No more working for a week or two
Fun and laughter on our winter holiday
No more worries for me or you 
For a week or two.....

(Summer Holiday - Cliff  Richard )




P r o l o g u e
আজ থেকে প্রায় আড়াইশো বছর আগে তখনকার দিনের শক্তিশালী স্প্যানিশ সরকার ক্যালিফোর্নিয়া অঞ্চলে স্থানীয় নেটিভদের ওপর আধিপত্য বিস্তারের জন্যে এক সুবিশাল পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। পরিকল্পনার দুটো ধরণ, আর সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য সেখানে পাঠানোও হয় দুই ধরণের মানুষ: মিশনারি এবং মিলিটারি। মিলিটারি করবে আক্রমণ, আর মিশনারি করবে ধর্মান্তকরণ। তাদের সেই সুদূরপ্রসারী সাঁড়াশী পরিকল্পনার ফলস্বরূপ, ১৭৬৯ সাল থেকে ১৮২৩ সাল পর্যন্ত ক্যালিফোর্নিয়ার প্রায় এক হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত করা হয় ২১টি মিশন। সবচাইতে উত্তরের মিশন স্যান ফ্র্যান্সিসকো, এবং সবচাইতে দক্ষিণের মিশন স্যান ডিয়েগো

এই সুদীর্ঘ এক হাজার কিলোমিটার জুড়ে, যেখানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো মিশনগুলো, যেই রাস্তায় ঘোড়া ছুটিয়ে একদিন নির্মিত হয়েছে উপনিবেশ, সেখানটাতে জড়িয়ে আছে এক রাস্তার নাম। ক্ষমতাবানদের আধিপত্য আর দূর্বল নেটিভদের অস্তিত্ব্ব বিলীন হয়ে যাবার চাক্ষুষ সাক্ষী হয়ে, আজও নীরবে নিশ্চুপ হয়ে থাকা সেই রাস্তার নামই 'এল ক্যামিনো রিয়েল'।

এই  বিস্তীর্ণ পথ পাড়ি দিতে গিয়ে পৃথিবীর রং-রূপ-সৌরভে তৃপ্ত যেমন হয়েছি, তেমনি আবার ঠিক কোন রূপকথার গল্প শুনিয়ে এ-মাটির মায়েরা তাদের শিশুকে ঘুম পাড়িয়ে দেয় সেটা জানতে না-পারায় অতৃপ্তও থেকেছি। আর বারে বারেই  মনে হয়েছে এক-পৃথিবী সৌন্দর্য দেখার জন্য, এক পৃথিবীর পথ চলার জন্য, এক জীবন বড়োই অল্প সময়। এই এক জীবন সমান স্বল্প সময়ের জন্য, আমাদের এই পৃথিবী অসম্ভব বাড়াবাড়ি রকমের সুন্দর। 



Day 0: (Dec 21st, 2013 - শনিবার)
মনুষ্য-জগতে যেমন দু'ধরণের কন্সটিপেশানের রুগী থাকে: ইসবগুলিস্ট আর জেলুসিলিস্ট - তেমনি IT-জগতে দু'ধরনের কোম্পানি আছে, একদল যারা ডিসেম্বরের লাস্ট উইকটা জোর করে শাটডাউন করে দেয়, আর আরেক দল শুধুমাত্র ২৫শে ডিসেম্বর আর নতুন বছরের ১লা জানুয়ারী ছুটি ঘোষণা করে (অনেক ভাবনা-চিন্তার পরে !)। তো, আমার অফিস হলো সেই দূর্লভ প্রজাতির এক অলস, Daycare টাইপের অফিস। সুতরাং ২৩শে ডিসেম্বর থেকে ২৭শে ডিসেম্বর পর্যন্ত আমাদের পরপর পাঁচদিনের ছুটি। এদিক-ওদিকের উইকেন্ডগুলোকে জুড়লে হয় টানা নয়দিন !!! লং-লং-ভে-ভে-রি রি-লং উইকেন্ড!! কি করি, কোথায় যাই, কার সাথে যাই, কবে যাই, এরকম অনেক কম্বিনেশনের পর ঠিক হলো ক্রিসমাসের এই লম্বা ছুটিতে দিন কয়েকের জন্যে স্যান-ডিয়েগোতে যাওয়া যেতে পারে। সেখানে হাতের কাছাকাছি LEGOLAND, SeaWorld, Animal Safari আর Zoo আছে যা বাচ্চাদেরকে চুম্বকের মতো আকর্ষণ করে থাকে। সুতরাং বাক্স-প্যাঁটরা সব বেঁধে নিয়ে ২১শে শনিবারের এক রোদ ঝলমলে সোনালী দুপুরে, প্রায় সাড়ে এগারোটা নাগাদ আমরা দুই ফ্যামিলি মিলে রওনা দিলাম বে-এরিয়া থেকে প্রায় ৪৬৫ মাইল দূরের শহর, "স্যান ডিয়েগোর" উদ্দেশ্যে। আগের বারের মতোই এবারেও ইন্দ্র, তার Honda Odyssey ভ্যানটাকে বলে-কয়ে রাজি করালো আমাদের সঙ্গে যেতে - না'হলে আরও একগাদা টাকার ধাক্কা সামলাতে  হতো car renting কোম্পানির কাছ থেকে!  

ঝকঝকে পাহাড়ি রাস্তা ধরে আমাদের গাড়ি ছুটে চললো স্যান ডিয়েগোর পথে - 101 South to 152 East, to I-5 South - মোটামুটি এই হলো গিয়ে আমাদের যাত্রাপথের মেজর হাইওয়েগুলো। পাহাড়ের পর পাহাড় দেখে দেখেও আমি কখনো ক্লান্ত হই না, বরং মনে নানান প্রশ্ন জাগে, হাজার হাজার বছর আগে কি করে, কবে জন্ম হয়েছিলো এই পাহাড়গুলোর? কেমন দেখতে ছিলো তাদের সে জন্ম লগনে? বস্তুত, নর্থ অ্যামেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া অঞ্চলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কোনো তুলনাই হয়না। কি নেই এখানে! সমুদ্র, নদী, পাহাড়, অরণ্য, ঝর্ণা, লেক, ডেজার্ট - সব মিলিয়ে মিশে ক্যালিফোর্নিয়া যেন প্রকৃতির এক আপস্কেল বিউটি পার্লার। এখানে এসে প্রকৃতি যেন নিজেকে নতুন করে সাজিয়ে নেয় ।
Hwy 152 East
Hwy 152 East

ছোটো ছোটো পাহাড়ী রাস্তাগুলোর মাঝে ছুটে পার হতে গিয়ে সমতল এলাকায় এলে দু'পাশে দেখা যায় স্ট্রবেরী, পেস্তা, পীচ, আর রসুনের ক্ষেত। চারিদিকের হাওয়া-বাতাসে কেমন যেন ঝাঁঝালো রসুন-রসুন গন্ধ জুড়ে আছে। পথের ধারে থাকা সাইনবোর্ডগুলোতে বড়বড় করে লেখা, ‘ফ্রেশ পীচ/স্ট্রবেরী/গারলিক পাওয়া যাচ্ছে' - কিনতে চাইলে এক্ষুণি গাড়ী থেকে নেমে পড়ুন - নিজে হাতে তুলে নিন খামার থেকে। 
Our Car
Our  Car 
অনেকে মিলে একসাথে করে গাড়িতে যাবার মজাই আলাদা। বেড়ানোর থেকে বরং গাড়ি-চড়াটাই আমার বেশী ভালো লাগে। একসাথে হাসি-আড্ডা-গল্প করা, স্ন্যাকস খাওয়া, মাঝে মাঝে গাড়ি থামিয়ে রাস্তার ধারের দোকান থেকে চা-কফি খাওয়া, কি রেঁস্তোরায় বসে লাঞ্চ-ডিনার সারা, আবার কখনো কখনো গাড়িতে বসেই ঢুলতে থাকা! 

দুপুর দুটো নাগাদ আমরা লাঞ্চ সেরে নেবার জন্যে I-5 Highway থেকে 368-নং exit নিয়ে হাজির হলাম 46330 Pacheco Blvd-এর ওপরে থাকা এক Mc Donald-এ। এই city-টার নাম হলো Firebaugh (CA 93622) - কাছাকাছির মধ্যে এই একটাই চেনা-জানা খাবারের দোকান, তাই দোকানে বেশ ভীড়, এমন কি রেস্টরুমে যাবার জন্যেও বিশাল লাইন। দোকানের মধ্যে দেখতে পেলাম আমাদের অফিসের PM  'জিগর'কে, দূরে লাইনে দাঁড়িয়ে আছে। পরে কথা বলবো ভেবে একসময় দেখি সে খাবার নিয়ে কখন চলে গেছে।  
Lunch at Mc Donald
বেশ কিছুক্ষণ ওয়েট করে থাকার পর তবে মিললো বসে-খাবার জায়গা। Mc Donald-এ সাধারণত 'Kids Meal'-এর বাক্সের মধ্যে একটা করে ছোট খেলনা থাকে! সুতরাং তিরাই, তিতির আর আদি, প্রত্যেকেই একটা করে নীল রঙের toy পেলো - প্রতিটির আলাদা আলাদা নাম আছে। আদি-র পাওয়া খেলনা ফিগার-টার নাম ছিলো 'Harmony' - খাওয়া-দাওয়ার পাট চুকলে আমরা আবার আমাদের যাত্রা resume করলাম। এবার I-5-এ দেখলাম গাড়ির ভীড় অনেক বেড়ে গেছে। মাঝে মাঝে একেবারে পুরো দাঁড়িয়ে পড়তেও হচ্ছিলো, যদিও কোথাও কোনো accident হয়েছে বলে চোখে পড়লো না। 

বেলা গড়ানোর সাথে সাথে রাস্তার দু'ধারে থাকা দৃশ্যাবলীর বদল চলতেই থাকে। ধীরে ধীরে বাদামী বিকেল লালচে হতে শুরু করে। পশ্চিম দিগন্ত ক্রমশ সোনালী থেকে মায়াবী ক্রিমসন রঙ ধারণ করে মনকে উদাস করে তোলে। নিজের অজান্তেই কখন গুনগুন করে উঠি: "ফেরারী হয়েছে মন, দূরের আঁধারে কোন, মুছে দিয়ে চলে যাই ঠিকানা..."  
পশ্চিম দিগন্তে তখন আগুনের রেখা
পশ্চিম দিগন্তে তখন আগুনের রেখা 
আরো কিছু পরে পরে,  ক্রমশ: জ্বলে ওঠে দূর-দূরান্তে থাকা ছোট ছোট শহরের বাতিগুলো, একেক করে। মাইলের পর মাইল যেন নিমেষে পার হয়ে চলি আমরা। পাশ দিয়ে উল্টো দিকে দ্রুত চলে যাওয়া দূরের ক্ষুদে  ক্ষুদে ঘর-বাড়ী গুলোকে  দেখে জানতে ইচ্ছে করছিলো  সেই  শহরের কি নাম, কারাই বা থাকে সেই অজানা দূরের গ্রামগুলোতে, কি করছে তারা এখন, জানে কি তারা যে কেউ ভাবছে  তাদের কথা...... কিন্তু, জানা হয় না, জানা যায় না। এক জীবন এতো দূরন্ত গতিতে ছুটে চলেও শেষ করা যায় না, তার আগেই সবকিছু  হাউই বাজির মতো নিঃশেষ হয়ে যায়! 


স্যান ডিয়েগো হলো অ্যামেরিকার পশ্চিম উপকূলের দক্ষিণভাগের শেষ শহর। এরপর শুরু হয়েছে মেক্সিকো - সেখান থেকে থেকে প্রচুর অবৈধ অভিবাসী অ্যামেরিকায় প্রবেশ করতে চায়। যার ফলে, এখানকার পুলিশ সবসময় সতর্ক থাকে, সময় বিশেষে ID-কার্ড দেখতে চায়। স্যান ডিয়েগো শহরের সুখ্যাতি আছে নানাবিধ কারণে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো তাপমাত্রা। সারাবছরই চমৎকার আবহাওয়া থাকে এখানে।  অন্য শহরগুলো যেখানে রোদ-বৃষ্টি-টর্নেডো-তুষারের অত্যাচারে জর্জরিত, সেখানে স্যান ডিয়েগোর আবহাওয়া সারা বছর জুড়েই আরামদায়ক। বসবাসের জন্য বেস্ট অ্যামেরিকান শহরগুলোর তালিকায় স্যান ডিয়েগোর নাম সবসময় উপরের দিকেই থাকে। তার উপর আছে সুদীর্ঘ নানান beach । আবার, স্যান ডিয়েগোকে বলা হয়ে থাকে ক্যালিফোর্নিয়ার জন্মস্থান। একদা এ-শহরকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে আজকের জমজমাট ক্যালিফোর্নিয়া। অ্যামেরিকার পশ্চিম উপকূলে সর্বপ্রথম এখানেই এসে জাহাজ ভেড়ায় ইউরোপিয়ানরা। বে-এরিয়ায় আমাদের বাসস্থল থেকে স্যান ডিয়েগো শহরের দূরত্ব মোটামুটি ৪৬৫ মাইলের মতো। টানা গাড়ি চালালে লাগবে আট থেকে নয় ঘণ্টা। রাস্তা ভালো থাকার দরুন এই সময়টা তেমন কিছুই নয়, কিন্তু সমস্যা হলো অন্য জায়গায়। যাবার পথেই পড়ে আরেক বিশ্বখ্যাত নগরী লস অ্যাঞ্জেলেস। সেটাকে পাশ কাটিয়ে যাওয়া অসম্ভব। আর সেই শহরের ঢোকার মুখে হয় বেজায় জ্যাম, বিশেষ করে লং উইকেন্ডের দিনগুলোতে।  
লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে স্যান-ডিয়েগো যাবার পথে পড়ে শহর: আরভাইন
লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে স্যান-ডিয়েগো যাবার পথে পড়ে আরেক শহর, নাম আরভাইন। এ শহরে পাহাড়ের ধাপে ধাপে বাড়িগুলো এমন ভাবে দাঁড়িয়ে থাকে যে মনে হয় কেউ বুঝি বইয়ের তাকে বই সাজিয়ে রাখার মতো করে পাহাড়গুলো কেটে বাড়ী গুলোকে পর-পর  সাজিয়ে রেখেছে। এই শহরেই এক সময় কর্মসূত্রে থাকতো আমার কলকাতার TCG-র এক সিনিয়র colleague, 'তন্ময় সাহা' - কিন্তু তার সাথে বহু বছর হয়ে গেলো কোনো যোগাযোগ নেই - বেমালুম যেন হাওয়া হয়ে গেছে সে। কেউ জানেনা তন্ময়দা এখন কোথায় আছে !   
মরমন ধর্মাবলম্বীদের সাদা গির্জা
মূল স্যান-ডিয়েগো শহরে প্রবেশের আগেই আগন্তুকদের অভ্যর্থনা জানাতে সূর্যের আলোয় জ্বলজ্বল করে দাঁড়িয়ে থাকে মরমন ধর্মাবলম্বীদের সাদা গির্জা। সারা বিশ্বে ছড়িয়ে ছিটিয়ে  থাকা মরমনদের ১৩৬ টি গির্জার মধ্যে এটি একটি। মার্বেল পাথরে তৈরী এই গির্জাকে রাতের বেলায় যেন আরো বেশি করে লম্বা আর সাদাটে দেখায়। 
Denny's -এ রাতের খাওয়া... 
পথের মাঝে কয়েকবার থেমে, Denny's-এ রাতের খাবার খেয়ে, ড্রাইভার বদল করে করে, আট ঘন্টার রাস্তা মোটামুটি এগারো ঘন্টায় কমপ্লিট করে, পাক্কা বাঙালীয়ানার সাক্ষর রেখে, আমরা প্রায় মধ্যরাতে গিয়ে পৌঁছালাম আমাদের হোটেলে, "Courtyard by Marriott" @ 2592 Laning Rd , San Diego
হোটেল: Courtyard by Marriott" @ 2592 Laning Rd
আমাদের হোটেল: Courtyard by Marriott" @ 2592 Laning Rd
অতো দেরী করে পৌঁছনোর জন্যেই মনে হয়  লাগেজপত্র তোলার জন্যে হেল্পার গোছের কাউকে দেখতে পাওয়া গেলো না। সুতরাং আমরা নিজেরাই একটা পেল্লায় বড়ো ট্রলিতে, আমাদের অজস্র বাক্স-প্যাঁটরা সব তুলে, ঠেলে ঠেলে দোতলায় আমাদের ঘরের (No: 231 & 233) দিকে রওনা হলাম। এইসব করতে গিয়ে তালেগোলে ইন্দ্রনাথের একটা দামী ল্যাপটপের ব্যাগ আমরা ভুল করে রাস্তার ধারে ফেলে চলে এলাম। সামান্য পরে সেটা খেয়ালে আসতেই পড়িমরি করে আমরা দৌড়ে নিচে নেমে এলাম, কিন্তু সে ব্যাগ তখন আর সেখানে নেই !!! মুখ সব শুকিয়ে চুন -  কিন্তু এ দেশ তো আমাদের দেশের মতো আর 'ছ্যাঁচড়া' কোনো দেশ নয়, তাই ইতিমধ্যে সহৃদয় কোনো ব্যক্তি সেই ব্যাগটিকে দেখতে পেয়ে রিসেপশন লাউঞ্জে জমা দিয়ে গিয়েছিলো। সেখান থেকে সেটাকে সহজেই উদ্ধার করা গেলো - উফফ, ধড়ে যেন আবার প্রাণ ফিরে এলো সবার !! 
স্যান ডিয়েগো সিটি ভিউ - রুমের ব্যালকনি থেকে
স্যান ডিয়েগো সিটি ভিউ - রুমের ব্যালকনি থেকে 
Marriott Hotel যথেষ্ট নামকরা, দামী হোটেল - রুমগুলো বেশ বড়সড়, ঝকঝকে তকতকে। ফ্রী-WiFi, ফ্রী-পার্কিং - আরো অনেক কিছু অ্যামেনেটিই ফ্রী এখানে। তবে প্রথম রাতে আমাদের ঘরে (#233) মাইক্রোওয়েভ দিয়ে যায় নি - সার্ভিস ডেস্কে ফোন করেও কোনো লাভ হয়নি। পরের দিন সকালে আবার ফোন করলে অবশ্য সেটা দিয়ে যায়। এটুকু খিঁচ ছাড়া আমাদের হোটেল-যাপন বেশ আরামদায়কই হয়েছিলো।       
Our Hotel Room# 233
পরের দিন স্থির হলো LEGOLAND যাবার। সেই মতো আমরা জিনিষপত্র কোনোমতে ঘরে গুছিয়ে রেখে, আদি-কে রাতের খাবার খাইয়ে দিয়ে, তাড়াতাড়ি করে ঘুমাতে গেলাম। প্রায় অর্ধ-দিনের টানা জার্নিতে ঘুমের দেখা মিলতে তেমন কোনো অসুবিধা হলো না।  


Day 1: (Dec 22nd, 2013 - রবিবার)
আমরা এখানে আসার আগে, অনলাইন থেকেই কেটে নিয়েছিলাম "Go San Diego - 3 day Pass Cards" - অর্থাৎ পরপর তিন দিন we can visit the attractions, one time on each valid day - টিকিট কাটার সময় মনে হয়েছিলো দাম বড্ড বেশি ($183), কিন্তু পরে দেখা গেল individual এন্ট্রিতে দাম আরও বেশি পড়বে! অনলাইনে টিকিট কাটলেও পার্কে ঢোকার জন্যে পেপার টিকিট লাগবে, আর সেটা লাইনে দাঁড়িয়েই collect  করতে হবে! এটা বেশ বোরিং ব্যাপার। বুঝলাম না, এতো কিছু এরা অনলাইনে করতে দিচ্ছে, তাহলে ঢোকার টিকিট আবার আলাদা করে কেন লাগবে, আর কেনই বা সেটা লাইন দিয়ে নিতে হবে!! অনলাইন থেকে প্রিন্ট করার কোন ব্যবস্থা নেই কেন!! যাই হোক টিকিট কালেক্ট করতে কিছুটা সময় গেলো। ক্রিসমাসের ছুটি পুরোদমে শুরু না হলেও ভীড় হয়েছিলো কিন্তু ভালোই। 
Debjani @ লেগোল্যান্ড
লেগোল্যান্ড 
California LEGOLAND is a chain of Lego-themed theme parks - Carlsbad City-তে থাকা Legoland is owned and operated by the British theme park company, Merlin Entertainments - আমাদের হোটেল থেকে গাড়িতে মাত্র আধ ঘন্টার পথ। এই Legoland-এ প্রায় ৬০-এর বেশি রাইড, শো আর attractions আছে। সঙ্গে toddler থাকলে, বিশেষ করে আদি-র মতো, চার-পাঁচটার বেশি পপুলার ইভেন্ট একদিনে দেখা সম্ভব নয়। তাই আমরা টার্গেট করলাম গোটা চারেক ভালো ভালো শো/রাইড, আর "MiniLand USA" দেখবো।
ক্যালিফোর্নিয়া লেগোল্যান্ড Entrance
ক্যালিফোর্নিয়া লেগোল্যান্ড 
সেই মতো আমরা "LEGO Clutch Powers 4D" শো-তে প্রায় দৌড়ুতে দৌড়ুতে ঢুকলাম। একদম শেষে ঢোকার জন্যে আখেরে ভালোই হলো - কিছু reserved জায়গা খালি পড়েছিলো, সেখানেই বসার অনুমতি মিলে গেলো। এটা ছিলো একটা দশ মিনিটের 4-D action packed অ্যাডভেঞ্চার মুভি, combined with wind, water and snow - এই শো 3D চশমা পরে দেখতে হয়। Technology is so cool that not only you visually feel like you are inside the movie, the combined wind-water-and-snow effects make it seem as if 'Clutch' is himself in the room with you.
LEGO Clutch Powers 4D" শো
The main focus of the movie is the teamwork between Clutch and his friends. Clutch and his team head out on a mission where they are forced to battle with an evil Rock Monster. Although they all want to get the box first, the only way to save the box from the rock monster is to work together. Thus without teamwork, the whole mission would be lost.

আদি অন্ধকার হলে ঢুকে প্রথমে কান্নাকাটি শুরু করলেও পরের দিকে ভালোই দেখছিলো, এমন কি কোলে বসে 3D চশমাটা পরেই দেখছিলো। শুধু যখন Monsterটা আসছিলো, তখন সেটাকে দেখে ভয় পেয়ে খুব কাঁদছিলো। তাই ওই সময়টুকু আমি ওর চোখে হাত চাপা দিয়ে রাখছিলাম। কিন্তু ও আবার মাঝে মাঝেই আমার হাত সরিয়ে দিয়ে দেখছিলো, আর কেঁদে উঠছিলো!! 

এরপর আমরা 'MiniLand USA'-তে গিয়ে "Coast Cruise Boat" রাইডের জন্যে লাইন দিলাম। This is an ideal vantage point to enjoy the sights and adventures along the lake shore and in Miniland - এখানেও লাইন ছিল বেশ বড়ো, আর এখানেও আদি খুব কাঁদছিলো - কিছুতেই বোটে উঠবে না! যাকে বলে একেবারে ভীতুর ডিম !! 
Sydney Opera House
Sydney Opera House
Taj Mahal
Taj Mahal
Mount  Rushmore
Mount  Rushmore
New York City Skyline
New York City Skyline
Gulliver's Travel @ MiniLand USA
Gulliver's Travel
বোট রাইডের পর আমরা লাঞ্চ সেরে নিলাম "Legoland Pizza & Pasta Buffet" বলে একটা রেঁস্তোরা থেকে। এখানে 'বাফে' সিস্টেম - প্রথমে pay করে দিয়ে ঢুকতে হয়, তারপর যতো খুশি পিৎজা, পাস্তা, বা স্যালাড খাওয়া যায়। কিন্তু একটাই প্রবলেম, এরা চিকেন পিৎজা রাখে না, কেন জানিনা - so  either veg. or red meat !  
Entrance to Legoland Pizza & Pasta Buffet
খাওয়া-দাওয়ার পর্ব চুকলে আমরা চললাম "Lost Kingdom Adventure"-এর দিকে। এখানে মোট চারটে adventure আছে - কিন্তু আমরা একটাই নিয়েছিলাম - "The dark ride" 
Lost Kingdom Adventure
These adventures are carefully designed to transport you back into 1920's Egypt. 

A 16-foot tall LEGO pharaoh guards the entrance to Lost Kingdom Adventure where you begin your journey to recover stolen treasure by blasting targets with laser guns. Your score is recorded and competition is fierce as skill and determination are the keys to a successful expedition.
Dark ride car
Visitors ride four to a car...
Inside Dark ride aisle
Aim for the targets to reveal many hidden critters...
এখানেও লাইন ছিলো বিশাল। কিন্তু সেই লম্বা ওয়েটিং সময়ের তুলনায় ride-টা ছিল খুব অল্প সময়ের। অন্ধকারের টানেলের মধ্যে দিয়ে যাবার সময় আদি মাঝে মাঝে কেঁদে উঠছিলো, তবে খুব একটা বেশি ঝামেলা করেনি। 
Mummy
শো শেষ হয়ে গেলে ফেরার পথে আমরা রাইডে থাকাকালীন আমাদের একটা স্যুভেনীর ফটো কিনে নিয়ে চলে এলাম। এটা একটা ভালো বিজনেস - প্রতিটি পপুলার রাইডের সময় এরা এদের দামী ডিজিট্যাল ক্যামেরা দিয়ে প্রতিটি গ্রুপের ফটো তুলে রাখে। রাইড শেষে বার হবার মুখে, এরা সেই ফটোগুলো প্রিন্ট করে, একটা রঙচঙে পেপার অ্যালবামে ঢুকিয়ে বেশ চড়া দামে বিক্রি করে। কিনতেই যে হবে এরকম কোন বাধ্য-বাধকতা নেই, কিন্তু এদের ডিসপ্লে করার ধরন এতোই সুন্দর আর innovative, যে কিনতে মন চাইবেই চাইবে।     
Dark Ride - স্যুভেনীর ফটো

Our next stop was the "MiniLand USA".  When we finally walked into MiniLand in the late-afternoon, my LEGOLAND experience changed from “Okay” to “Cool!” This is one of the most spectacular attractions at LegoLand. Here you will get the chance to see the world from Gulliver's perspective. It is awe inspiring to see some of the famous, Big Cities in the United States in miniature settings, being turned into 'LEGO' plastic brick marvels... San Francisco, New York, New Orleans, Washington DC, Las Vegas, New England Harbor and Los Angeles. Each city has all of the typical sites and popular sites you could imagine including famous landmarks, streets and street corners, parks, hotels, casinos, houses, people, cars and animals. Seeing all the cities in great, minute detail makes a lively conversation about real visits to some of the places.  
Washington D.C. in LEGO @ LEGOLAND, California
Washington D.C. in LEGO @ LEGOLAND, California
San Francisco City Road in 'MiniLand USA' at LEGOLAND, California
San Francisco City Road in 'MiniLand USA' at LEGOLAND, California
San Francisco Golden Gate, in 'MiniLand USA' at LEGOLAND, California
San Francisco Golden Gate, in 'MiniLand USA' at LEGOLAND, California
New York City in 'Miniland USA' at LEGOLAND, California
New York City in 'Miniland USA' at LEGOLAND, California
MGM Hotel (Las Vegas) in 'Miniland USA' at LEGOLAND, California
 MGM Hotel (Las Vegas) in 'Miniland USA' at LEGOLAND, California
The MIRAGE (Las Vegas) in 'Miniland USA' at LEGOLAND, California
 The MIRAGE (Las Vegas) in 'Miniland USA' at LEGOLAND, California
আরও কয়েকটা রাইড বা শো-তে যাবার ইচ্ছা ছিলো, কিন্তু সাড়ে-পাঁচটা বাজার পরই, ঝুপ করে খুব দ্রুত সন্ধ্যার আঁধার নেমে এলো, সাথে নিয়ে একরাশ কনকনে ঠান্ডা। আমরা তাড়াতাড়ি একটা চা-কফির দোকানের খোঁজে পা চালালাম। 
Evening  coffee at 'The Market', Food/Coffee stop
Evening  coffee at 'The Market', Food/Coffee stop
কিছু দূর হেঁটে "The Market" নামে একটা ফুড-স্টপ চোখে পড়তেই আমরা সেখানে গিয়ে পছন্দমতো কফি নিয়ে বসে পড়লাম। মাথায় থাকা বড়বড় ছাতার ছাউনিতে ঠান্ডা কিছুটা আটকালো। বেশ কয়েকটা Heat Stand-ও চোখে পড়লো এদিক-সেদিক, কিন্তু তাদের বেশিরভাগই তখন চালু ছিলো না। কিছু পরে সেগুলোকে চালু করে দিয়ে গেলো, তখন তাদের কাছাকাছি বসে উত্তাপ পোহাতে বেশ আরাম লাগছিলো। আদি ইতিমধ্যে তার 'দুপুরের ঘুম' শুরু করে দিয়েছিলো stroller-এ বসে বসেই।      
Evening  coffee at 'The Market', Food/Coffee stop
ঘুম ভাঙতেই সে বায়না জুড়ে দিলো। বেশ কিছুক্ষণ সেখানে বসে গল্পগুজব করে, রেস্ট নিয়ে আমরা LEGOLAND-কে  বিদায় জানিয়ে রওনা দিলাম পার্কিং লটের উদ্দেশ্যে। আবার এখানে আসার ইচ্ছা রইলো, তবে আসবো আদি আরেকটু বড়ো হলে - অন্তত বছর পাঁচেকের হলে।

হোটেলে ফিরে মুখ-হাত ধুয়ে, একটু  ফ্রেশ হয়ে নিয়ে আমরা হোটেলের রেঁস্তোরাতেই সে-রাতের ডিনার সেরে নেবার প্ল্যান করলাম। খুব বেশি লোকজন তখন ডাইনিং হলে ছিলো না। এখানে খাবারের মেনু ছিলো পুরোপুরি অ্যামেরিকান - 'মাশরুম স্যান্ডুউইচ' যে কতোটা ডেঞ্জারাস করে বানানো যায়, সে সমন্ধে একটা ভালোমতো আইডিয়া হয়ে গেলো আমার। একগাদা আলু খেয়ে পেট ভরিয়ে আমরা উঠে পড়লাম। 'আলু সেদ্ধ মাখা' ভালো, না কি 'Mashed potato with gravyভালো, এটা ভাবতে ভাবতে ঘরের দিকে হাঁটা লাগালাম। আমাদের পরের দিনের গন্তব্য স্থির হলো জগৎ বিখ্যাত 'SeaWorld' of San Diego...   




Day 2: (Dec 23rd, 2013 - সোমবার)
ঘরের মধ্যে মাইক্রোওয়েভ থাকার সুবিধা হলো যখন তখন at least চা-টা নিজে করে খাওয়া যেতে পারে। এরা অবশ্য ঘরেতে কফি ছাড়া কিছু রাখেনা, কিন্তু আমি সংগে করে টি-ব্যাগ আর splenda নিয়ে এসেছিলাম। সকালে উঠে চায়ের কাপ হাতে করে, ব্যালকনিতে বসে প্রাকৃতিক শোভা দেখার মতো মজা আর কিছুতে নেই। তবে সোনায় সোহাগা হতো যদি হাতে থাকতো 'আনন্দবাজার' খবরের কাগজ !! A Man, who knows the combined smell of আনন্দবাজার, চা, নিমকি, অ্যান্ড ব্যালকনি-এয়ার; knows 'True Love'... 
এয়ারপোর্ট কাছে থাকার জন্যে প্রায় দু'মিনিট অন্তরই একটা করে প্লেন উড়ে যেতে দেখলাম। আদিকে একবার প্লেন কাকে বলে দেখিয়ে দিয়ে, পরে 'প্লেন প্লেন' করে হাঁক দিতেই সে দৌড়ে ব্যালকনিতে এসে হাজির হতো, এমন কি কোনো প্লেন না-থাকা স্বত্তেও !!  
San Diego City View from our Hotel Room / Balcony (#233)
San Diego City View from our Hotel Room / Balcony (#233)
SeaWorld হলো আমাদের হোটেলের খুব কাছেই - মাত্র মিনিট দশেকের পথ - "500 SeaWorld Drive, San Diego" - কিন্তু সেখানে গিয়ে ঢোকার টিকিট কালেক্ট করতেই প্রায় চল্লিশ মিনিটের মতো লেগে গেলো। অপেক্ষা করতে করতে আদি বিরক্ত হয়ে শেষে কান্না জুড়ে দিলো। এখানেও বেজায় ভিড় হয়েছিলো আজ। 
Big lines at SeaWorld entrance...
Big lines at SeaWorld entrance...
SeaWorld-এ ঢোকার অপেক্ষায়...
SeaWorld-এ ঢোকার অপেক্ষায়... 
প্রোগ্রাম সিলেকশন - SeaWorld
প্রোগ্রাম সিলেকশন - SeaWorld 
Reindeer of Santa Claus
Reindeer of Santa Claus
সান্টা ক্লসের রেন-ডিয়ার দেখে আমরা "Penguin Encounter" exhibit দেখার জন্যে হাঁটা দিলাম। যাবার পথে দেখি "Despicable Me" movie-র cute Minions-ওলা soft toys-গুলো খেলার ষ্টলে ঝুলছে।  
"Despicable Me" Minions: Dave, Stuart, Kevin, Phil, Karl, Jerry, Bob, Tim...
"Despicable Me" Minions: Dave, Stuart, Kevin, Phil, Karl, Jerry, Bob, Tim...
তাদেরকে দেখে একটা নেবার খুব ইচ্ছা জাগলো মনে। ঠিক করলাম পরে আবার এখানে আসবো - কিন্তু সেটা আর হয়ে ওঠেনি !

"Penguin Encounter" exhibit-টা  একটা ঠান্ডা, অন্ধকার বিশাল হলঘরের মধ্যে। The exhibit smells like fish but it is well worth the walk through, they are some amazing little birds. Their winter months are June through August. We encountered more than 100 penguins of various types. Everyone enjoyed the penguins and their flying friends swoop and swim among the rocky cliffs and icy waters of this wonderfully realistic habitat.
"Penguin Encounter" exhibit

পেঙ্গুইন দেখা শেষ হয়ে গেলে আমরা বাইরে বেরিয়ে কিছু ফটো তুললাম - তার পর Wild  Arctic'-এর arctic animals দের দেখার উদ্দেশ্যে লাইন দিলাম।
"Penguin Encounter" exhibit
Wild Arctic also offers a ride, but we did not go for that ride since it was known to be an ordinary one. 
Wild Arctic entrance
Here we saw charming beluga whales, astonishing walruses, and powerful polar bears. Beluga whales are also called 'sea canaries' for the wide range of sounds they can make. Belugas can swim forward as well as backwards - a rarity among whales. 

While it's difficult to predict if these animals are going to be photogenic or not - the bears, whales, and walruses were still interesting. Specially the polar bear - we saw only one bear this time. It was wandering around by the glass continuously - may be  feeling hungry or little warmer ?
Polar bear
Polar bear
Beluga whales
এখান থেকে বেরিয়ে দ্রুত "Shamu Show - One Ocean" দেখার জন্যে হাঁটা লাগালাম। Shamu Show-র জন্যে গেট খোলে শো-এর আধ ঘন্টা আগে। দেরী করে গেলে সামনের "Wet Zone"-এ বসা ছাড়া উপায় থাকবেনা - যেটা আমরা কেউই চাই না। 
Shamu Show - One Ocean
Shamu Show is one of the main highlights of SeaWorld - in fact everyone's favorite show - এই শো আমি আগেও একবার এসে দেখেছি - বছর আটেক আগে। 

It's always cool to see large animal perform tricks on command. It would be amazing if the trainers could go into the water with the whales, but we all know that probably will never happen again, at least not in America (after that deadly accident in Florida). 
Shamu Show - One Ocean

Shamu Show - One Ocean
The trainers did a superlative job training the killer-whales to do some crazy flips and  jumps. Sounds, lights and action matched up pretty well. 
Shamu Show - One Ocean
Huge pre-historic beasts doing amazing tricks and getting people wet. There really isn't any bad seat in the gallery, but to get the full effect of how big they are and how high they can get out of the water, you need to be closer to them.
Shamu Show - One Ocean

Shamu Show
Shamu Show দেখা শেষ করে আমরা সেদিনের লাঞ্চ সেরে নিলাম "Manny Ray's" নামের এক লোকাল পিৎজ্জার দোকানে। দোকানের পাশে থাকা খাবারের চেয়ারে বসে অপেক্ষা করতে করতে দেখলাম কয়েকটা সবুজে-গলা duck খাবারের লোভে এদিক-সেদিক ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদেরই একজন আদি-র একটু কাছাকাছি আসতেই আদি তাকে দেখে, রীতিমত ভয় পেয়ে কান্না জুড়ে দিলো। সেও ভয় পেয়ে, কিম্বা বিরক্ত হয়েই তার নিজের ভাষায় 'কোয়াক কোয়াক' করে চেঁচানি শুরু করলো। Both are equally scared to each other !!
Who is more scared than the other?
Who is more scared than the other?
তবে এই  দোকানের 
পিৎজ্জা খেতে এক কথায় যাকে বলে জঘন্য। ইন্দ্রনাথের মতে 'Pita Bread'-এর উপরে কয়েকটা আধা-সেদ্ধ চিকেনের টুকরো ফেলে পিৎজ্জা বলে দিয়ে দিয়েছে! আমি আবার অর্ডার করেছিলাম "Pizza with Barbecue Sauce"!! - ভেতো বাঙালীর পক্ষে যা খুবই দু:সাহসিক কম্বিনেশান - কিন্তু luckily সেই sauce-টা খেতে লাগছিলো কিছুটা গুড়ের মতো।  তাই দিয়েই আমি আর আদি লাঞ্চটা কোনরকমে সেরে নিলাম। 'জাতিষ্মর' সুমন চ্যাটুজ্জ্যে থাকলে এ পিৎজ্জা দেখে বীতশ্রদ্ধ হয়ে নির্ঘাৎ গেয়ে উঠতেন: "এ রুটি কেমন রুটি, থ্যাবড়া মোটা, স্বাদটা জলো  / এ চিকেন আধা-সেদ্ধ, একেও তুমি পিৎজ্জা বলো ?"  Pizza Hut বা Round Table-এর মতো অতি সাধারণ pizza-chain গুলোও যে কেন এখানে নেই, তা ভেবে অবাক হলাম। মনে হয় থাকলে বাকিরা কেউই competition-এ টিকতে পারবে না, তাই-ই।       

কিছু  Gift Store ঘুরে এরপর আমরা "Dolphin  Show - Blue Horizon" দেখার জন্যে রওনা হলাম। সবাই মিলে সেখানে পৌঁছুতে একটু দেরী হয়ে গিয়েছিলো, তাই গ্যালারীর একদম উপরের দিকের সীটগুলোতে বসতে হলো। এক সাউথ ইন্ডিয়ান মহিলা অযথা একগাদা সীট রিজার্ভ করে বসেছিলো, তার সঙ্গে আসা অগুন্তি তেঁতুলে লোকজনেদের জন্যে, সেই নিয়ে বেশ কিছুটা ফালতু কথা কাটাকাটি হলো। We are a bunch of good people with a common inability... the inability to convince each other of our goodness !!
Dolphin  Show - Blue Horizon
The Dolphin show is an "interesting" show  -  the dolphins entertained the spectators for about 5 to 7 minutes and then they quickly exited to the other side of the pool, past the barrier. After that they had a "Cirque du Soleil"-ish type of performance going on. The performers had on brightly colored costumes and they dove into the water multiple times. One lady was dressed as a large parrot and she was suspended in the air to emulate a parrot flying through the sky. These people were quite talented but I was still missing the dolphins. Then, toward the end of the show, pilot whales joined the performance. They splashed people and jumped out the water multiple times.
Dolphin  Show - Blue Horizon
It seemed that dolphins are not a significant part of the performance, though the name of the show is "Dolphin Show". I do wish Sea World would gear their shows a little more towards animal and environmental education, like they used to earlier.
Indrajal Comics#144: 'আশ্চর্য্য শুশুক'
Indrajal Comics#144: 'আশ্চর্য্য শুশুক'
গ্যালারীর টঙে বসে বসে এই Dolphin show  দেখতে দেখতে মনে পড়ে গেলো যে সেই ছোটবেলায় ইন্দ্রজাল কমিকসে, অরণ্যদেবের গল্পেতে দুই শুশুকের কথা জেনেছিলাম - 'সলোমন' এবং 'নেফারটিটি' - সলোমন হলো 'বিজ্ঞ', আর নেফারটিটি হলো 'দারুণ সুন্দরী' - তখনও জানতাম না যে শুশুক-ই হলো এক ধরনের Dolphin - বেসিক্যালি River Dolphin-দের লোকাল নামই হলো গিয়ে শুশুক।   
ধীরে ধীরে দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়ে গেলো - আমরা সামান্য কিছু স্ন্যাকস খেয়ে নিয়ে "SeaLion & Otter Live Show" দেখার জন্যে রওনা দিলাম। এখানেও আমাদেরকে গ্যালারীর বেশ উপরের দিকেই বসতে হলো। 

"SeaLion Live" was a great show to schedule at the end of SeaWorld day, because it's mostly a parody show. Also if you show up for it during the day, you'll be treated to the harsh Sunlight. The main stars of the show were two sea-lions named 'Seamore' and 'Clyde' but they're almost upstaged by the stagehand 'Biff'.  
SeaLion Live Show
Looking at the horizon at distant, from the upper side of the gallery, suddenly  I felt to be in a different world, where we have no more worries - neither any tension, nor any sadness - everything is filled up with joy & happiness...

দিনের বেলার চকচকে রূপালি সূর্য বিকেল বেলায় রক্তবর্ণ ধারণ করে তলিয়ে যেতে থাকলো সাগরের অপর পারে...
SeaLion Live Show - Th ebeutiful Horizon at far...
SeaLion Live Show
The Sea Lions were very cute and had a lot of personality. I specially liked the dance portion of the show with the animals and the people. 

Sea-Lions-শো দেখা শেষ করে আমরা SkyTower Ride-এর জন্যে হাঁটা লাগলাম। সন্ধ্যাবেলায় অন্যান্য সব শো/ইভেন্ট শেষ হয়ে গেছে বলে এখানে দেখলাম প্রচুর লোক এসে ভীড়  করেছে। লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে খেলতে খেলতে তিতির হঠাৎই 'নিজের বাবা' মনে করে অচেনা এক লোকের হাঁটু জড়িয়ে ধরে ফেলে, পরেই তা বুঝতে পেরে লজ্জা পেয়ে কান্না জুড়ে দিলো!  বেশ কিছুক্ষণ এঁকে-বেঁকে লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে থেকে আমরা SkyTower-এ উঠলাম। এটা একটা 320-foot উঁচু tower -  তৈরী হয়েছিলো 1969 সালে। The ride was refurbished in 2007 with a new capsule. The ride gives passengers a six-minute view of SeaWorld and San Diego. It rises at a rate of 150 feet per minute while spinning slowly (1.02 rpm). 
SkyTower Ride
আমরা capsule-এর নিচের তলায় বসেছিলাম। টাওয়ারের একদম উপরে উঠে, নিচের দিকে তাকিয়ে SeaWorld-কে দেখে বড়োই ছোটো মনে হতে লাগলো। "...দেখি শহরটা পড়ে আছে নীচুতে / সবার উপরে আছি আমরা /  আহা, হারায়নি কোনো দিনও কিছুতেই / আলোর কবিতা তুমি জ্বেলে দিলে আঁধারে..."  But still its a very nice view, 100 miles in every direction.

এর পর আমাদের আর করার তেমন কিছু ছিলো না।  কিছু স্যুভেনির, গিফট আইটেম কেনার জন্যে দোকানে দোকানে ঘুরে বেড়ালাম - কয়েকটা penny স্টাম্পিং কালেক্ট করলাম। তিরাই একটা water gun গেমস খেলে একটা soft toy পেয়ে গেলো। আমার ভাগ্যে অবশ্য কিছুই জুটলো না। 'Despicable Me' মুভি-র Minions ক্যারেক্টারওলা soft toys গুলো পাবার জন্যে অনেক চেষ্টা করলাম - কিন্তু একটাও ক্লিক করলো না। ওগুলো আবার এখানে কিনতেও পাওয়া যায় না !! গেম খেলে জিতলে, তবে পাওয়া যায়!! কিন্তু বেশীরভাগ দোকানই এখন বন্ধ হয়ে গেছে। 
SkyTower beautifully decorated for Christmas
SkyTower beautifully decorated for Christmas
গাড়িতে উঠে আমরা রাতের ডিনার সেরে নেবার জন্যে রওনা দিয়ে দিলাম। গাড়ির জানালা দিয়ে দূরের সেই  SkyTower-এর চূড়ায় থাকা জ্বলজ্বলে স্টারটাকে দেখে মনেই হলো না, যে সেটার হাইট ১২ ফুট উঁচু হতে পারে! 

গত রাতে আমাদের হোটেলেতে করা ডিনারের পর আজ আমি 'মাশরুম স্যান্ডুউইচ' ছাড়া অন্য যে কোন জিনিষই খেতে পারি বলে দৃড় বিশ্বাস! ঠিক হলো কাছাকাছির মধ্যে থাকা এক গ্রীক রেঁস্তোরায় খেতে যাওয়া হবে। এর আগে আমি কখনো গ্রিক রেঁস্তোরায় খাই নি, তাই উৎসাহী হয়ে উঠলাম। 
Dinner @ গ্রীক রেঁস্তোরা

Harbor Greek Cafe2556 Laning Rd, San Diego 

অ্যাড্রেস খুঁজে দেখা গেলো সেটা প্রায় আমাদের হোটেলের ক্যাম্পাসেই!! কিন্তু দোকানের সামনে গিয়ে মনে হলো সেটা একটা ছোটখাটো ফার্স্ট ফুডের দোকান। তাই প্রথমে সবাই দোনমনা করতে লাগলো, কিন্তু আশেপাশে তেমন আর কোনো ভালো খাবারের দোকান দেখতে না-পাওয়ায় শেষ পর্যন্ত সেটাতেই আল্টিমেটলি যাওয়া হলো। পরে অবশ্য দেখা গিয়েছিলো খাবারের স্বাদ বেশ ভালোই। গ্রিক খাবার অনেকটা মেডেটেরিয়ান খাবারের মতোই। আমরা বেশিরভাগই কাবাব অর্ডার করে দিয়েছিলাম।
মোহময়ী 'চিকেন কাবাব'
মোহময়ী 'চিকেন কাবাব' - আদর, আদর, আদর 
অনেকদিন পর ঝরঝরে দেরাদুন চালের ভাত খেয়ে দিব্ব্যি লাগলো। আদির জন্যে একটা ভেজ পিৎজ্জা অর্ডার করা হয়েছিলো - কিন্তু সেটা এরা মোটেই ভালো বানাতে পারেনি। ডিনার সেরে দোকান থেকে বার হবার সময়, দেবযানী আস্তে করে দোকানের দরজাটা ঠেলা দিয়ে খুলতেই, 
দরজার গায়ে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা আদি, ঢিপ করে মাটিতে গড়িয়ে পড়লো !! এই নিয়ে দেবযানী আজ দু'বার কাউকে না কাউকে 'গড়িয়ে' ছাড়লো !!       
আমাদের পরের দিন, অর্থাৎ শেষ দিনের গন্তব্য স্থির হলো "San Diego Safari Park", আর জগৎ বিখ্যাত "San Diego Zoo"...  




Day 3: (Dec 24th, 2013 - মঙ্গলবার)
San Diego Zoo-তে আমরা আগেও একবার এসেছি, সে জন্যে ঠিক হলো প্রথমে আমরা সাফারি-টা সেরে তবে Zoo-তে ফিরে আসবো। তবে হোটেল থেকে Safari Park-এর ডিসট্যান্স ভালোই - যেতে প্রায় ঘন্টা খানেক লেগে গেলো।
Way to Safari Park...
অনেকেই শুনেছি Zoo-এর থেকে Safari-টা বেশি পছন্দ করে, কারণ animals here roam free and wild, and we all prefer to see animals running free, rather being locked up in cages. Parking rate is decent here only $10 per car. The animals here also looked pretty healthy and happy. Every dollar spent here goes back to the park, of course employees are paid as well, but this is an amazing stop while in San Diego.
Safari Park Entrance
This is undoubtedly a super fun place to walk around, loads to see and some great interaction areas for kids. Animal petting areas, walking with lemurs, getting face to face with bats, etc. From elephants and rhino to birds and pigs. You can see it all here.  

There is a lot of additional stuff not included in admission that looks fun to do: Ropes Course, Zip-Lines, Hot Air Balloon, Wildlife Safari Rides. It's still a fun place to visit but we only experienced one-third of what we could, and/or what's on offer for the price of admission.
Flamingos
Flamingos
'Bazar'...

Walking at Safari Park

'greedy' Lorikeets drinking 'nectar juice'
You can feed the 'greedy' Lorikeets 'nectar juice' - with your own hand... 
Lemurs
Lemurs - they sleep most of the daytime...
Not happy to take picture with Lemur tail on back
Not happy to take picture with Lemur tail on back !!
The Tram ride is a good way to see a lot in a short period of time. They also offer an hour-long caravan ride, but that was costly. Luckily we did not have to wait more than 5 minutes for the "Africa tram" ride. The safari was really a fun and great learning experience. It's great to see animals that have been rescued and animals that are roaming in a large area. There are many great photo opportunities. The tram ride was about 25-30 minutes long. 
Lion at San Diego Zoo Safari Park
Lion at San Diego Zoo Safari Park
Cheetah
Cheetah 
Rhino
Rhino 
Giraffes
Giraffes

We decided to take the 400 ft Giant "Hot Air Balloon Ride" ($18) since none of us took such ride before. This ride was also a great fun & exciting one. We saw the whole park from above, like a bird and took some great photos.
Hot Air Balloon Ride
Massive Air Balloon that goes up if the weather is right
Hot Air Balloon Ride
We waited quite a long time for the "Balloon Ride" and thus could not afford to wait further for another exciting live show, "Cheetah Run". We were getting late, so we decided to skip the lunch to save some time and rushed toward the parking lot. 

We thought we would barely be able to enter the "Zoo", but alas!, that day, the last bus tour ended at 4 PM, which we did not realize earlier. The Zoo was inside city area and we had to take busy downtown road to reach there. There was too much traffic in that afternoon. Ultimately when we reached at the Zoo's ticket counter, it was already 4:45 PM. 
San Diego Zoo - Main entrance
লোকজন ইতিমধ্যে দল বেঁধে Zoo  থেকে ফিরতে শুরু করে দিয়েছে - সুতরাং এবারের মতো আমাদের আর 'Zoo' দেখা হয়ে উঠলো না। আমরা সেই পড়ন্ত বিকেলে বেলাতে, main  entrance-এর সামনে দাঁড়িয়ে কয়েকটা ফটো তুলে চলে এলাম। 
Our car - Honda Odyssey
Our car - Honda Odyssey
১৯১৬ প্রতিষ্ঠিত এই স্যান ডিয়েগো Zoo এবং সাথে থাকা Safari Park-এ  বিপন্ন প্রাণীদের রক্ষার্থে প্রতিনিয়ত গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রায় এক'শো একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত এই স্যান ডিয়েগো Zoo-তেই 1999 সালে বিরল এবং বিলুপ্তপ্রায় জায়ান্ট পান্ডা, "হুয়া মেইর" জন্ম নেয়, যেটা ছিলো কোনো অ্যামেরিকান চিড়িয়াখানায় প্রথম পান্ডা জন্ম হবার ঘটনা। নবজাতক সেই পান্ডাকে দেখার জন্য হাজার হাজার লোক সে-সময় চিড়িয়াখানায় ভীড় করে। তারও আগে ১৯৮৭ চীন সরকার দু'শ দিনের জন্য স্যান ডিয়েগো চিড়িয়াখানাকে দু’টি পান্ডা ধার দেয়। চীন সরকারের বিভিন্ন দেশকে পান্ডা উপহার পাঠানোর কিংবা ধার দেবার রীতিটি ইতিহাসে 'পান্ডা ডিপ্লোম্যাসি' নামে পরিচিত। 

২৪শে  ডিসেম্বরের রাত - আমাদের ট্যুরের শেষ রাত। দুপুরে সবাই ভালো করে লাঞ্চ করিনি - তাই ঠিক করা হলো ভালো কোনো এক রেঁস্তোরায় গিয়ে ডিনারটা সারা যাবে। সেই মতো, গুগল সার্চ করে আমরা কাছাকাছি (@7077 Friars Rd, San Diego, CA 92108), এক "PF Chang"-এ গিয়ে হাজির হলাম। এটা একটা বিশাল 'শপিং মলের' কাছে - মলের নাম 'Fashion Valley Mall' - শপিং মলের ভিতর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে দেখলাম লোকজন পাগলের মতো বেড়িয়ে পড়েছে ক্রিসমাসের কেনাকাটার জন্যে। "Men on Nicotine...Women on Shopping... *** Red Alert *** " 
Stores  at Fasion Valley Mall, San Diego
Stores  at Fasion Valley Mall, San Diego
এই মলে দেখলাম Apple  আর Microsoft, দুই জায়েন্টেরই store  রয়েছে। এদেশে আসার পর এখনো পর্যন্ত আমি এই দুটো store-এর কোনোটা থেকেই কোনদিনও কিছু কিনিনি! শপিং Mall-এর একটা জায়গায় দেখলাম সাদা দাড়িওয়ালা, মোটা এক সান্টা ক্লস অলরেডি এসে হাজির, আর এদেশীয় বাবা-মায়েরা তাদের কিডস-দেরকে সাথে করে  লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে সেই সান্টার সাথে ফটো তোলবার জন্যে। নিজের মনেই হেসে উঠলাম একটা কথা ভেবে! Just few extra pounds, chubbier cheeks, suitable costume, and our Tagore would have been the most authentic Santa, ever... কতো রঙ্গে ভরা, বঙ্গ দেশ আমার!! বাকীরা অলরেডি এগিয়ে যাওয়ায় সেখানে আর বেশিক্ষণ দাঁড়ানো হলো না আমার। 
"P.F. Chang" restaurant @ 7077 Friars Rd, San Diego, CA  92108
"P.F. Chang" restaurant @ 7077 Friars Rd, San Diego, CA  92108
শপিং মলটা ক্রশ করে, রাস্তার অন্য পারে গিয়ে আমরা  "PF Chang"-এ ঢুকলাম। দেখলাম এটা বেশ বড়লোকি রেঁস্তোরা - ভালোই ভীড় হয়েছে সেই  রাতে। সারা দুপুর কিছু না-খেয়ে আমাদের ক্ষিদেও পেয়ে গিয়েছিলো ভীষণ। স্কুলে থাকাকালীন পড়েছিলাম কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতা: 'পূর্ণিমা চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি' - এখানে বসে আশেপাশের খাবারের স্বাদু গন্ধে আমার জিভে জল চলে এলো, মন গুনগুন করে গেয়ে উঠলো: "খাবার জুটেছে তাই ঝুম ঝুম ঘন্টা বাজছে জিভে, খাবার জুটেছে চিকেনের  কষা পাতে, খাবার খাবার জুটেছে খাবার..." - কিছুক্ষণের মধ্যেই এসে গেলো আমাদের অর্ডার দেওয়া সব খাবার। 
HOT-n-SOUR Soup and Spicy Green Beans...
HOT-n-SOUR Soup and Spicy Green Beans...
Starters-এ অর্ডার দেওয়া 'Hot-n-Sour Soup', ইয়াম্মি 'Chicken Lettuce Wraps' আর 'Dynamite Shrimp' খেয়েই পেট যেন পুরোপুরি ভরে উঠলো। 
Chicken Lettuce Wraps...
Chicken Lettuce Wraps...
মেন কোর্সে নেওয়া হয়েছিলো 'Ginger Chicken with Broccoli' আর 'Kung Pao Chicken', সঙ্গে Fried rice - কিন্তু সেসব খাবার আর জায়গা রইলো না। Kung Pao Chicken পুরোটাই রয়ে গেলো। আমাদের অর্ডার দেওয়া প্রায় সবকটা চাইনীজ খাবারের স্বাদই লাগলো বেশ, বেশ ভালো। যাক বাব্বা! কষ্ট করে এখানে এসে ভুল করিনি তা'হলে!
Ginger Chicken with Broccoli and Kung Pao Chicken (too much nuts !!! )
Ginger Chicken with Broccoli and Kung Pao Chicken (too much nuts !!! )

আগামীকাল যেহেতু ২৫শে ডিসেম্বর, তাই বেশীরভাগ দোকানেরই বন্ধ থাকার কথা। সেজন্যে আমরা রাতের খাবার যা যা বাঁচলো, তা সব TO-GO বাক্সে প্যাক করে নিলাম। হোটেলে ফেরার পথে এক Walgreens ঘুরে আরো কিছু টুকটাক খাবারপত্র কিনে নিলাম, আগামীকাল দুপুরের জন্যে। 

'বেড়ানো শেষ' ভাবতেই মন খুব খারাপ হয়ে গেলো। ঘরে ফিরে জিনিষপত্র কিছুটা গুছিয়ে রেখে আমরা শুয়ে পড়লাম - বাকিটা কাল সকালে আবার গোছাবো। লাস্ট চারটে দিন যেন দেখতে দেখতেই কোথা দিয়ে কেটে গেলো, অথচ শুক্রবার রাতে অফিস থেকে ফিরে, যখন বেড়াতে যাবার জন্যে জিনিসপত্র প্যাক করছিলাম, তখন মনে হচ্ছিলো যেন আমরা ক-তো-দিনের জন্যে বাইরে কোথাও যাচ্ছি !   


Day 4: (Dec 25th, 2013 - বুধবার)
আজ ২৫শে ডিসেম্বর, 'শুভ বড়োদিন' - Merry Christmas!! Facebook-এ দেখলাম একগাদা মেসেজ এসেছে। হোটেলের রুমের দরজায় দেখলাম একটা বড়ো লাল রঙের, সান্টা-ক্লস মোজার মধ্যে একটু কেক, ক্যান্ডি, কুকি, মার্শমালো, ঝুলিয়ে দিয়ে গেছে। যাক! কেক-বিহীন বড়োদিন কাটাতে হলো না আর। মনে পড়ে গেলো গতবছর বড়দিনে আমরা সবাই মিলে কলকাতায় ছিলাম - সেবার সবেমাত্র মন্দারমণি থেকে বেড়িয়ে, দোকান থেকে কেক কিনে নিয়ে দেবযানীদের বাড়ি ফিরেছিলাম। এবছরও আমরা বেড়িয়েই ফিরছি - তবে ইন্ডিয়াতে নয় ! 

সকালবেলা দশটা নাগাদ  আমরা হোটেলের ডাইনিং হলে বসে ভালো করে পেট পুরে ব্রেকফার্স্ট সেরে নিলাম। এক জোড়া কলা পকেটে পুরে, Room  Checkout করে, আমরা গাড়িতে উঠে বসলাম। গাড়ির পিছনে রাখা স্তুপাকৃতি লাগেজের বহর দেখে মনে হলো এই গাড়ি এখন চললে হয়! 
The 'Team'
The 'Team' - Indra is taking the photograph...
ফেরার পথে ঠিক হলো একটু 'La Jolla' (লা হ’য়া) beach ঘুরে যাবো। এটা এখানকার বেশ বিখ্যাত beach - এখানে সূর্যাস্ত দেখা নাকি এক অপরূপ অভিজ্ঞতা। আদিগন্ত প্রশান্ত মহাসাগরের কোলে আস্তে করে লুকিয়ে পড়ে পনেরো কোটি কিলোমিটার দূরের সূর্য্য। দেখে যেন মনে হয়, সমুদ্রই বুঝি তরল আগুন, আর সে আগুনের সংস্পর্শে এসে শীতল সূর্যটা আস্তে আস্তে গলে গলে ঝরে পড়ছে সমুদ্রের জলেতে। অপূর্ব নাকি সে দৃশ্য। 
It is by far the very best sandy beach I have ever been to, approximately one mile long - peaceful place in off-season, gorgeous setting, gentle kid-friendly waves.
La Jolla (লা হ’য়া) beach
People comes the "La Jolla" shores to surf, swim, walk and run - for kayaking, scuba diving, birthday parties, or just to lounge around. It's a little slice of paradise. There are few bonfire pits are seen here and there. Anyone must fall in love with the soothing sounds of the ocean and gentle kid-friendly waves.
We are there at La Jolla (লা হ’য়া) beach
La Jolla (লা হ’য়া) beach-এ আমরা...
La Jolla (লা হ’য়া) beach
This beach has designated swimming or surfing areas, clean water, clean shore and a lot of space - actually whatever possible you may expect in a beach!! But it's kind of crowded. 
La Jolla (লা হ’য়া) beach  - Surfing...
সমুদ্রতীরে দাঁড়িয়ে ঠান্ডা একেবারেই লাগছিল না, কিন্তু জলে হাত দিয়ে বুঝলাম সেটা বেশ কনকনে, পাথুরে ঠান্ডা। অথচ তারই মধ্যে সার্ফিং স্যুট পরে লোকজন ঝাঁকে ঝাঁকে সার্ফিং বোর্ড নিয়ে নেমে পড়েছে। দেখে মনে হলো ঠিক যেন কোনো James Bond-এর মুভি দেখছি। 
আচ্ছা, আমাদের লালমোহনবাবু আর ব্রিটিশ স্পাই, জেমস বন্ড, দু'জনকে একসাথে কোনো সিনেমায় নামিয়ে দিলে সেটা কি সুপার-ডুপার হিট হতো ? কাল্পনিক কিছু সংলাপ এলো মনে... 
লালমোহনবাবু:  ইম্প্রেসিভ মাস্ক !
বন্ড (007):  থ্যাঙ্ক য়্যু !
লালমোহনবাবু:  বাট, মাঙ্কি ক্যাপ অফার্স বেটার প্রোটেকশান ইউ নো, এস্পেশালি ইন লেট ডিসেম্বর...  
বন্ড (007):  ডু ইউ হ্যাভ এনি আইডিয়া হোয়াট ইট টেকস টু এনশিওর দ্য সেফটি অফ এ মিলিয়ন পিওপল ?
> লালমোহনবাবু:  আরে মশাই ! জাস্ট আস্ক শিয়ালদা' স্টেশন মাস্টার !
বন্ড (007):  এরর...  হোয়াট ?
> লালমোহনবাবু:  বাট, মানতেই হবে, কস্টিউম সীমস 'জম্প্যেশ' -  ফ্রম নিউ মার্কেট, স্যার?
> বন্ড (007):  ওহ: নো,  সেল্ফ ডিজাইনড, লিটল ম্যান...
লালমোহনবাবু:  মার্কেট ইট মশায়, মার্কেট ইট !!  হিউজ স্কোপ ইন গড়িয়াহাট...
বন্ড (007):  ইউ হ্যাভ এনি আইডিয়া অ্যাবাউট হোয়াট আই ডু?
> লালমোহনবাবু (with a modest smile)ইউ হ্যাভ এনি আইডিয়া অ্যাবাউট হোয়াট প্রখর রুদ্র ডাস ?
বন্ড (007)প্রখর.র.র.... হু? 
> লালমোহনবাবু:  হেঁ, হেঁ - হ্যাভ ইউ হার্ড দ্যা বেঙ্গলী সেয়িং, ঘুঘু দেখছো, ফাঁদ দেখোনি ?
বন্ড (007)Meaning?
লালমোহনবাবুহে: হে: - স্যার, অল ইউ হ্যাভ সীন জোকারস, বাট নট এ ম গ ন লা ল !!
La Jolla (লা হ’য়া) beach  - Surfing...
Beach দেখা শেষ হলে, গাড়িতে ফিরে এসে জুতো-জোড়া থেকে বালি-গুঁড়ো যতসম্ভব ঝেড়ে ফেলে, আমরা গাড়িতে উঠে বসলাম। পালা করে সবাই মিলে গাড়ি চালাতে চালাতে বাড়ির পথে রওনা দিলাম। হাতে গোনা কয়েকটা খাবারের দোকান অবশ্য আজও খোলা ছিলো। এমনই এক ফার্স্ট ফুডের দোকানে (Carl's Jr) বসে আমরা রাতের ডিনারটা সেরে নিলাম। সঙ্গে করে নিয়ে আসা গতরাতের চাইনিজ ফুড গাড়িতেই বসে বসে গন্ধ ছড়াতে লাগলো।

গাড়িতে ফুয়েল ভরতে বা ড্রাইভার বদল করার জন্যে আরো বার কয়েক আমরা বিভিন্ন গ্যাস-স্টেশনে দাঁড়ালাম। দেখলাম আমাদের মতো অনেকেই সেই ২৫শে ডিসেম্বরের রাতে গাড়ি করে বেড়াতে চলেছে। অবশ্য তাদের কাছে আজ বেড়ানো শুরু হলো - আমাদের সারা! কে জানে কোথায় যাচ্ছে তারা। কেউ বেড়িয়ে ফেরে বাড়ি, আবার কেউ বেড়াতে ছাড়ে বাড়ি। মনে ইচ্ছা হলো আমরাও, বাড়ি না-ফিরে বরং গাড়িটা  ঘুরিয়ে নিয়ে আবারও বেরিয়ে পড়ি কোথাও!! অন্তবিহীন পথে চলাই  জীবন, শুধু যোগ-বিয়োগের খেলাই জীবন... 




E p i l o g u e
Radio Mirchi-র "সানডে সাসপেন্সে" হয়ে যাওয়া ফেলুদার রহস্যোপন্যাস "বাদশাহী আংটি" শুনতে শুনতে আমরা ৪৬৫ মাইল রাস্তা আস্তে আস্তে পাড়ি দিয়ে দিলাম। অবশেষে যখন আমরা কিউপারটিনোতে এসে পৌঁছালাম, তখন ঘড়িতে রাত দশটা বেজে গেছে। মোটামুটি standard সময়েই এসে পৌঁছেছি, অন্তত: যাবার মতো অতো দেরী এবারে আর হয়নি। তবে ২৫শে ডিসেম্বর বলে রাস্তাও কিছুটা খালি ছিলো। 
গাড়ি থেকে আমাদের জিনিসপত্র তাড়াতাড়ি নামিয়ে নিয়ে আমি বাকিদের বিদায় জানিয়ে দিলাম। কাঁচা ঘুম ভেঙ্গে যাওয়ায় আদি আবার কাঁদার উপক্রম করলো !!
*  *   ~  ~  ~  *  *  
The journey, the tour was fantastic - full of fun and joy - quite refreshing and enjoyable. Hope to revisit LEGOLAND someday, when my kid will turn little bit older...

"আবার আসিবো ফিরে, এই লেগোল্যান্ড-এর ভীড়ে..." - আপাতত এখন জানাই বিদায়... 
27 month old Adi (Dec 2013)
Happy Holidays and Merry Christmas...

Tour Photo Links:
লেগোল্যান্ড ট্যুর
SeaWorld ট্যুর
Safari Park & La Jolla Beach